নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, জনসাধারণের কষ্ট, দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য পালের চরের চ্যানেল দিয়ে ফেরি চলাচল করবে। এটা একটি ডাউনওয়ার্ড চ্যানেল এবং ২৮ কিলোমিটারের একটি ভ্রমণ। দূরত্ব বেশি হওয়ায় আমরা এটি এতদিন ব্যবহার করিনি। কিন্তু, আজকালের মধ্যে এই চ্যানেলে ফেরি চালু হবে। কিন্তু, এইদিক দিয়ে শুধু জরুরি যানবাহন চলবে। তবে, অ্যাম্বুলেন্সের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো এই পথ ব্যবহার না করার জন্য নিরুৎসাহিত করবো। তাদের পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করার অনুরোধ। কারণ পাটুরিয়ায় অনেক ফেরি ও লোকবল দেওয়া হয়েছে ৷
মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে উপস্থিত হয়ে সরেজমিন পরিস্থিতি দেখার পর সচিব সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আট দিন একটানা এই নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে নৌরুটিকে চালু করে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে এক রাতের মধ্যে চর ভেঙে এই চ্যানেল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এসে কয়েকটি বিকল্প চ্যানেল পরিদর্শন করেছি ও পরিকল্পনা চলছে এই চ্যানেলটিকে অক্ষত রাখার জন্য কী করা যায়। লৌহজং টার্নিং দুইদিনের মধ্যে খুলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে, যদি সবকিছু অনুকূলে থাকে। ইতোমধ্যে সেখানে ড্রেজার কাজ করছে।
তিনি বলেন, এছাড়া হাজরার চর যা প্রায় এক কিলোমিটার, একটি বিকল্প চ্যানেল হিসাবে আছে। সেখানে ড্রেজিং করার পরিকল্পনা আছে। ড্রেজিং করলে এটি চালু করতে পারবো। কিন্তু এগুলো করতে সময় লাগবে। লৌহজং চ্যানেল কিন্তু অনিশ্চিত। কেননা পাশেই ভাঙ্গন চলছে, যেকোনও সময় বন্ধ হয়েও যেতে পারে। আগামী দুইদিনের মধ্যে ফেরিটা চালু করে জনসাধারণের কষ্টটা লাঘব করার চেষ্টা চলছে।
নদী ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে থাকা ঘাটের রক্ষণাবেক্ষণ করার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু পদ্মা সেতু চালু হলে এই রুটে চলাচলকারী যান পদ্মাসেতু ব্যবহার করবে সেহেতু ঘাটের ব্যাপারে আমরা স্থায়ী কিছু করবো না। আমাদের কাজ হবে রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে নেওয়া। নদী ভাঙনে থেকে ঘাট রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অনল চন্দ্র দাস, বিআইডব্লিউটিএ এর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিসি এর চেয়ারম্যান খাঁজা মিয়া, বিআইডব্লিউটিএ এর চিফ ইঞ্জিনিয়ার (ড্রেজিং) আব্দুল মতিন, পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে অর্নিদিষ্টকালের জন্য সব ধরনের ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। চ্যানেলে বিপর্যয়ের কারণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। এই রুটে নাব্য সংকটসহ নানা সমস্যার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি নদী ভাঙনের কারণে হুমকির মুখে আছে শিমুলিয়া ঘাট।