Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৭ এপ্রিল ২০২০

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক এর সভাপতিত্বে এবং মাননীয় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি' র উপস্থিতিতে গত ৪ এপ্রিল ২০২০ তারিখ রোজ শনিবার ঢাকা নদী বন্দরের সম্মেলন কক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে "করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ও দূর্যোগকালীন সময়ে নৌপথে করনীয় বিষয়ে" নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সহিত লঞ্চ মালিক সমিতির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং আলোচনান্তে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়


প্রকাশন তারিখ : 2020-04-04

 

বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম মোহাম্মদ সাদেক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলমান দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণের জন্য অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এম.পি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব অনল চন্দ্র দাস, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান জনাব খাজা মিয়া, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর সৈয়দ আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহন সংস্থা (যাপ) এর চেয়ারম্যান জনাব মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম এবং লঞ্চ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দসহ উপস্থিত সকলকে স্বাগত জানান।  
 
২.১।      সভার শুরুতে বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান এ দুর্যোগের সময় মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে উপস্থিত হওয়ার জন‍্য সকলকে ধন‍্যবাদ জানান। তিনি করোনা মোকাবেলায় ইতঃপূর্বে গৃহীত কার্যক্রমে সকলের সহযোগিতার জন‍্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ঢাকাসহ বিভিন্ন নদী বন্দরে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক ঘাট শ্রমিক, লঞ্চ শ্রমিক ও নৌকার মাঝিদের খাদ‍্য সহায়তা, পানি সরবরাহ কর্মসূচি অব‍্যাহত রাখাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তিনি মাননীয় প্রতিমন্ত্রীকে আসন্ন দুর্যোগ মোকাবেলায় পরবর্তী করণীয় বিষয়ে আলোকপাত করার জন্য অনুরোধ জানান।
 
২.২      সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন‍্যবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু নৌপরিবহন ব‍্যবস্থা অব্যাহত রাখাসহ করোনা মোকাবেলায় ইতঃপূর্বে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানের জন্য লঞ্চ মালিকগণসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি করোনা ভাইরাসজনিত মহাদুর্যোগে পতিত দেশসমূহের বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে আলোকপাত করেন। তিনি করোনা মহামারিতে জনগণকে চিকিৎসা সেবা প্রদানে উপকুলীয় অঞ্চলসহ নৌপথের বিভিন্ন স্থানে বড় লঞ্চসমূহকে আইসোলেশন/চিকিৎসা সেন্টার করার জন‍্য লঞ্চ মালিকগণসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়াও তিনি করোনা মোকাবেলায় সরকারের পরবর্তী যাবতীয় পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সহযোগিতা প্রদানে সকলকে অনুরোধ জানান এবং নৌযান শ্রমিকদের সহযোগিতায় সরকারের পক্ষ থেকে মালিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
 
২.৩।      যাত্রী পরিবহন সংস্থার চেয়ারম্যান জনাব মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম, লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষে জনাব বদিউজ্জামান বাদল, জনাব শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া, জনাব আবুল কালাম খান বক্তব্য রাখেন। জনাব মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বীর বিক্রম বলেন, গত ২৪ মার্চ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে লঞ্চসমূহ বন্ধ করা হয়েছে। এতে দেশের বিভিন্ন ঘাট/পয়েন্টে লঞ্চসমূহ আটকা পড়ে আছে। অরক্ষিত এসকল লঞ্চকে সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে আসা প্রয়োজন। লঞ্চ মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ জানান, লঞ্চ না চললেও লঞ্চসমূহের নিরাপত্তা বিধানে স্টাফদের খাদ্য ও পানি সরবরাহ আব্যাহত রাখতে হচ্ছে। তারা জনগণের সেবায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। তাছাড়া, বিদ‍্যমান পরিস্থিতিতে লঞ্চসমূহের নিরাপত্তা বিধানসহ বিদ্যমান সমস‍্যাসমূহ সমাধানে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন। লঞ্চ মালিক সমিতির পক্ষে শ্যামবাজারের খালি জায়গায় নৌযান শ্রমিকদের জন্য একটি শেল্টার নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। এ প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান, বিআইডব্লিউটিএ বলেন, নৌযান শ্রমিকদের জন্য বিভিন্ন স্থানে শেল্টার নির্মাণের জন্য বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। সভায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সকলের করণীয় বিষয়ে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসমূহ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, তিনি করোনা দুর্যোগের সময়ে নৌযান চলাচল, পণ্য পরিবহন, মালামাল উঠানামা ও নিরাপত্তা বিধানে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
 
২.৪।      সভায় নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব সুষ্ঠু নৌপরিবহন ব‍্যবস্থার মাধ‍্যমে জনগণকে প্রত্যাশিত সেবা প্রদানসহ করোনা মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপ বাস্তবায়নে লঞ্চ মালিকদের আন্তরিকতার জন‍্য ধন‍্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসজনিত মহামারির কারণে আমরা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় আছি। এজন্য, সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি আমাদের এখনই গ্রহণ করতে হবে। অরক্ষিত লঞ্চসমূহকেও সুরক্ষিত অবস্থানে নিয়ে আসতে হবে। দুর্যোগের সময়ে লঞ্চসমূহকে আইসোলেশন কেন্দ্র/চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতে হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পরামর্শ গ্রহণপূর্বক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। একইসাথে লঞ্চসমূহের নিরাপত্তাও বিধান করতে হবে এবং আপৎকালীন সময়ে লঞ্চ শ্রমিকদেরকে প্রয়োজনীয় সাহায্য প্রদান করতে হবে। তিনি নৌযান শ্রমিকদের জন্য শেল্টার নির্মাণসহ বিদ্যমান সমস্যাবলী সমাধানে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।  
 
২.৫।      সভাপতি বলেন, করোনা ভাইরাসজনিত বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষজ্ঞগণের ধারণা মে-জুন মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো বড় রকমের দুর্যোগের কবলে পতিত হতে পারে। তাই আমাদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লঞ্চগুলোর নিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি শ্রমিকদেরকেও সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা প্রদান করা হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাথে সমন্বয় করে লঞ্চসমূহকে আইসোলেশন কেন্দ্র/চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখতে হবে।
 
৩.০।         বিস্তারিত আলোচনান্তে নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয়ঃ
 
(ক) করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সেবায় আইসোলেশন/চিকিৎসা সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের জন্য লঞ্চসমূহ উপকুলীয় অঞ্চলসহ নির্ধারিত স্থানে প্রস্তুত থাকবে এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশনার আলোকে সেগুলো প্রয়োজন অনুযায়ী কাজে লাগানো হবে;
(খ) প্রাথমিকভাবে আইসোলেশন/চিকিৎসা সেবায় ব্যবহারের জন্য ৫টি বৃহদাকার লঞ্চ প্রস্তুত রাখতে হবে;
(গ) ঢাকা নদী বন্দরে যে সকল লঞ্চকে বার্দিং সুবিধা দেয়া হবে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে সেসকল লঞ্চের নামের তালিকা বিআইডব্লিউটিএ-কে দিতে হবে;
(ঘ) বিভিন্ন নদী বন্দরে আটকে থাকা লঞ্চসমূহকে নিরাপদ স্থানে আনতে হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাথে পরামর্শক্রমে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে;
(ঙ) বিআইডব্লিউটিএ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৌযান শ্রমিকদের জন্য শেল্টার নির্মাণ সংক্রান্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করবে।
 
৪।         সভায় আর কোন আলোচনা না থাকায় সভাপতি উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।